Sunday, August 30, 2015

ওজন কমাতে কোনটা সহায়ক, ভাত না রুটি


কোনটি আসলে ভালো, ভাত না কি রুটি - এ নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ মাত্রই এ দ্বিধায় পড়ে যান। পুষ্টিবিদরা কিছু ক্ষেত্রে ভাতকে প্রাধান্য দেন, আবার কিছু ক্ষেত্রে রুটি। বিশেষ বিশেষ রোগের ক্ষেত্রে যেমন ডায়াবেটিস, কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার বেশ প্রভাব ফেলে। জেনে নিন ভাত এবং রুটি সম্পর্কে কিছু বিষয়, তারপর আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, ভাত খাবেন না রুটি?

খাদ্যগুণ বিচার করতে গেলে একদিক থেকে ভাতের চেয়ে আটার রুটি বেশি ভালো। কারণ রুটি অনেক বেশি তাপশক্তি বা ক্যালরি উত্‍পাদন সক্ষম। যেমন, আধা ছটাক চাল থেকে পাওয়া যায় ১০২.১ ক্যালরি আর আধা ছটাক আটা থেকে পাওয়া যায় ৯৬.৪ ক্যালরি। কিন্তু যখনই রান্না হয়, তখন দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। চাল থেকে যখন ভাত তৈরি হলো তখন চালের ক্যালরি ১০২.১ থেকে নেমে দাঁড়ায় ৫৬.৭। অথচ আটার ক্যালরি ৯৬.৪ রুটি হয়ে দাঁড়ায় ১০১.২।
সাদা ধবধবে চালের প্রতি মানুষের দুর্বলতা রয়েছে। কিন্তু ওই বেশি-ছাঁটা চালে ভিটামিন কম থাকে। আবার যখন ভাতের মাড় বা ফ্যান ফেলে দিয়ে রান্না করা হয় তখন বাদ পড়ে যায় প্রোটিন, খনিজ লবণ ও ভিটামিনের বড় একটা অংশ। গমের তুষের ক্ষেত্রেও একই ভুল করা হয়। আটা চেলে নিয়ে রুটি বানানো হয়। অথচ গমের তুষে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১ বা থায়ামিন থাকে।

সবদিক বিচার করে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, প্রতিদিনই দুই ধরনের খাদ্যশস্য যেমন ভাত-রুটি মিশিয়ে খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে ভাত হলো কম ছাঁটা চালের আর রুটির ক্ষেত্রে তুষযুক্ত আটার রুটি। ভাত-রুটির প্রসঙ্গে এদের অন্তর্গত সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সম্বন্ধে জেনে নিন কিছু বিষয় - ভাতে পানি দিয়ে রাখলে অর্থাত্‍ পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তৈরি হয়। তবে পান্তা ভাত ধুয়ে নিয়ে খেলে উপকার হবে না, ভেজানো পানিসহই খেতে হবে। রুটি করার সময়ও একটু বেশি পানি দিয়ে আটা মেখে বেশ কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে তারপর রুটি করতে হয়। এতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তৈরি হয়। মাখা আটার লেচি অল্প একটু তুলে রেখে পরের দিন আটা মাখার সময় সেটা মিশিয়ে নিতে হয়। আবার সেদিনের একটু লেচি রেখে পরের দিনের ফ্রেশ আটার সঙ্গে মেখে রুটি তৈরি করতে হয়। এ পদ্ধতির সাহায্যেও রুটিতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স তৈরি হয়।
জেনে নিন চাল ও গমের আটার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম মেশিনে ছাঁটা চালে রয়েছে -
এনার্জি ৩৪৫ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ৬.৪ গ্রাম
ফ্যাট ০.৪ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৭৯.০ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ২৪ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১৩৬ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ ০.২১ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.০৯ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ৩.৮ মিলিগ্রাম
তবে আতপ চালের চেয়ে সেদ্ধ চালে পুষ্টি বেশি। বিশেষ করে সেদ্ধ চালে ভিটামিন বি১ এবং কিছু খনিজ পদার্থ বেশি থাকে।

প্রতি ১০০ গ্রাম গমের আটায় রয়েছে -
এনার্জি ৩৪১ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ১২.১ গ্রাম
ফ্যাট ১.৭ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৬৯.৪ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ৪১ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৩৭২ মিলিগ্রাম
আয়রন ৩.৩ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ ০.৫৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.১২ মিলিগ্রাম
নিয়াসিন ০.৩ মিলিগ্রাম

তথ্যসূত্র: চিন্ময় সেনগুপ্ত, বিনা ওষুধে রোগ নিরাময়, ২০০৩

search tags: ruti khele ojon kome? vat khala ozon bare, vat na ruti, ruti na vath, vat e fat beshi, kon chal valo.

ভ্রমন কালীন সময়ে বমি প্রতিরোধের উপায়


ভ্রমণে বিশেষ করে গাড়িতে ভ্রমণ করতে গেলে অনেকেরই বমি বমি ভাব হয় বা বমি করে থাকেন। কারও মাথা ঘুরায়। এ ভয়ে অনেকেই গাড়িতে ভ্রমণ করতে ভয় পান। আসুন জেনে নিই এর কারণ ও প্রতিকার-

বমি হওয়ার কারণ :

সাধারণত অনেকগুলো কারণে বমি হয়ে থাকে। যেমন ধরুন কেউ ভীষণ অসুস্থ, সেই অসুখের জন্য বমি হতে পারে। আবার বিষাক্ত কিছু খেলেও বমি হতে পারে। বাজে গন্ধ বা বাজে স্বাদের খাবারের কারণেও বমি হতে পারে। হতে পারে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণেও। আবার কোনো কারণে খাদ্যনালী বন্ধ হয়ে গেলেও বমি হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা মোশন সিকনেসের কারণেও বমি হতে পারে।

ভ্রমনে মোশন সিকনেস :

‘মোশন সিকনেস’ ভ্রমনের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। এটি মূলত মস্তিকের এক ধরনের সমস্যা। বিশেষ করে বাস, প্রাইভেটকার বা এ জাতীয় বাহনগুলিতে এ সমস্যা হয়। শরীরের অন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসাম্য রক্ষা করে। যখন গাড়িতে চড়ি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে সে গতিশীল। কিন্তু চোখ বলে ভিন্ন কথা। কারণ তার সামনের বা পাশের মানুষগুলো কিংবা গাড়ির সিটগুলো তো স্থির। চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বয়হীনতার ফলে তৈরি হয় মোশন সিকনেস’। এ কারণে তৈরি হয় বমি বমি ভাব, সেই সাথে মাথা ঘোরা, মাথা ধরা প্রভৃতি।

মোশন সিকনেস থেকে বাঁচার উপায় :

মোশন সিকনেস থেকে বাঁচার উপায় হলো, জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা। এ সময় লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে হবে, হতে পারে মেডিটেশনও। প্রয়োজন হলে চোখ বন্ধ করে রাখুন। এ সময় বই পড়বেন না বা স্থির কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। আদা চিবাতে পারেন। আদা মোশন সিকনেসে কাজে দেবে। ভ্রমনে যাদের বেশি সমস্যা হয় তারা গাড়িতে ওঠার আধঘন্টা আগে ডমপেরিডন জাতীয় ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন। গাড়ির ভেতরে দৃষ্টি নিবদ্ধ না রেখে যত দূর সামনে দৃষ্টি যায়, তাকিয়ে থাকুন। আপনার অন্তঃকর্ণ ও চোখ তখন একই সিগন্যাল পাঠাবে মস্তিষ্কে যে গাড়ি চলছে, আপনিও চলছেন। জানালার কাছে সিট নিন। জানালাটা খুলে দিন। খোলা বাতাসে মন-প্রাণ থাকবে চনমনে। গাড়িতে আড়াআড়ি বা যেদিকে গাড়ি চলছে সেদিক পেছন দিয়ে বসবেন না। যাত্রা শুরুর একটু আগে ভরপেট খাবেন না বা পান করবেন না। কিছু ওষুধ যেগুলো বমি বন্ধ করতে পারে যেমন- ওনাসেরন সিনারন, মেক্লাইজিন ক্লোরফেনাইরামিন, অ্যাভোমিন ইত্যাদি ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করতে পারেন। আদা, চুন-সুপারি ছাড়া পান কিংবা চুইংগাম চিবানোতেও উপকার পাওয়া যেতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ
www.bd-pratidin.com

search tags: bomi hole koronio, garite uthle bomi hole ki korbo, bus e bomi ashle ki korbo, garite bumi bondher upay, garite uthle bomi ashar karon, bomir oushudh.

Saturday, August 29, 2015

মাথা ঘোরা রোগের সমাধান


অনেকেই মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো সমস্যায় ভোগেন। এটি সাময়িক হতে পারে আবার বেশ কিছু অসুখের কারণেও হতে পারে। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের প্রধান ও অধ্যাপক ডা. এ এফ মহিউদ্দিন খান। লিখেছেন আতিউর রহমান
মাথা ঘোরা বা ভার্টিগো এক ধরনের অনুভূতি, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তি মনে করে সে নিজে ঘুরছে অথবা তার চারপাশের সব কিছু ঘুরছে।
যদিও ভার্টিগো শব্দটির আভিধানিক অর্থ উচ্চতাভীতি।
মাথা ঘোরার কারণ
হঠাৎ দুঃসংবাদ শুনলে, বেশি উঁচুতে উঠলে, গাড়িতে বা জাহাজে ভ্রমণ করলে, চোখের বেশ কিছু সমস্যায়, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আর মস্তিষ্কে টিউমার হলেও মাথা ঘুরতে পারে।
মাথা ঘোরার সাধারণ কারণের মধ্যে একটি বিপিপিভি বা বিনাইন পার-অক্সিসমাল পজিশনাল ভার্টিগো, যাতে মাথা একটা নির্দিষ্ট অবস্থানে নিলে মাথা ঘোরার অনুভূতি হয়। অবস্থান পরিবর্তন করলে তা সেরে যায়। সাধারণত ক্যালসিয়ামযুক্ত কিছু পাথরসদৃশ ক্ষুদ্র কণা অন্তঃকর্ণের নালিতে ঢুকে গেলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। কণা সরে গেলে বা বের হয়ে গেলে ভার্টিগোর অনুভূতি থাকে না। তবে ক্যালসিয়ামের পাথর ছাড়াও বিপিপিভি হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে।
মাথা ঘোরার আরেকটি সাধারণ কারণ মিনার ডিজিজ। এটা মধ্যকর্ণের অসুখ। এখানে কোনো কারণে তরল, পুঁজ বা পানি জমা হলে মাথা ঘোরার অনুভূতির সঙ্গে কানে ঝিনঝিন শব্দ হয় এবং শ্রবণশক্তি ধীরে ধীরে কমে যায়।
কানের আরেকটি অসুখেও মাথা ঘোরে, যার নাম ভেস্টিবুলার নিউরাইটিস বা ল্যাবেরিন্থাইটিস। এটা অন্তঃকর্ণের সমস্যা, সাধারণত ভাইরাসজনিত ইনফেকশন থেকে হয়। এ ধরনের ইনফেকশনে অন্তঃকর্ণের ভেতরে থাকা স্নায়ুর প্রদাহ হয়।
এ ছাড়া মাথা ঘোরার আরো কারণের মধ্যে আছে-
* ঘাড়ে বা মাথায় আঘাত
* মাইগ্রেন
* ব্রেইন স্ট্রোক
* কানের ভেতরে আঘাত।

লক্ষণসমূহ
ভার্টিগোর লক্ষণ কয়েক সেকেন্ড থেকে শুরু করে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। একবার সেরে আবারও হতে পারে। কারো কারো বারবার হতে পারে। লক্ষণের মধ্যে আছে-
* নিজে ঘোরার অনুভূতি
* চারপাশের সব কিছু ঘোরার অনুভূতি
* কাত হয়ে পড়ে যাওয়া
* কোনো কিছু ভীষণভাবে চেপে ধরেছে এমন অনুভূতি
* দাঁড়িয়ে থাকার নিয়ন্ত্রণ হারানো
* মনে হচ্ছে একদিকে কেউ টেনে নিয়ে যাচ্ছে
* বমি বমি ভাব
* চোখের মণির অস্বাভাবিক নাড়াচাড়া বা নিস্টাগম্যাস
* মাথাব্যথা
* ঘেমে যাওয়া
* কানে ঝিনঝিন বা শনশন শব্দ হওয়া, শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া।
উল্লেখ্য লক্ষণ হিসেবে সবসময় 'মাথা ঘোরা' নাও থাকতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
মূলত রোগ নির্ণয়ে রোগীর প্রদত্ত বর্ণনাই বেশি ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসক সাধারণত রোগীর কাছে জানতে চান কখন এবং কিভাবে প্রথম মাথা ঘোরার অনুভূতি হলো, কত দিন পর পর মাথা ঘোরার সমস্যা হয়, হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হয় কি না, কোনো বিশেষ কারণে বা শব্দে বা কাজ করতে গেলে মাথা ঘোরে কি না, কানে ব্যথা বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কি না। কখনো কখনো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন হয়। এগুলোর মধ্যে আছে টেস্ট ফর নিস্টাগম্যাস, ডিক্স হলপিক টেস্ট, রমবার্গ টেস্ট ইত্যাদি।

মাথা ঘোরার চিকিৎসা
* সাধারণত বিশ্রাম নিলে সাময়িক সময়ের ভার্টিগো সেরে যায়। কোনো ওষুধ ছাড়াই সেরে যায়। যেগুলো এমনিতেই সেরে যায় না তার চিকিৎসা নির্ভর করে কারণের ওপর।
* বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ওষুধের সাহায্যে মাথা ঘোরার সমস্যা ঠিক করা যায়। আমাদের দেশে এ ওষুধগুলো সহজলভ্য। এগুলোর মধ্যে আছে স্টেমিটিল, ভার্গন, সিনারন, ভিসার্ক, মিনারিল ইত্যাদি।
* ভ্রমণসংক্রান্ত ভার্টিগোতে বা যখন বমি বমি ভাব থাকে তখন বমি প্রতিরোধক ওষুধও প্রয়োগ করা হয়।
* যদি ইনফেকশন, প্রদাহ ইত্যাদি থেকে ভার্টিগো হয়, তবে অ্যান্টিবায়োটিক, কখনো কখনো স্টেরয়েড ওষুধও দেওয়া হয়।
* মধ্যকর্ণে পানি জমার চিকিৎসায় অনেক সময় ডাইইউরেটিক ওষুধও ব্যবহৃত হয়।
* কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপিও প্রয়োজন হতে পারে।
* অনেক সময় সার্জারি বা অস্ত্রোপচারেরও দরকার হয়।

কখন মাথা ঘোরা বিপদের কারণ?
নিচের লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
* কানে কম শোনা
* কানে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া
* মাথায় তীব্র ব্যথা
* বমি হওয়া বা সব সময় বমি বমি ভাব হওয়া
* কম দেখা বা দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া।
মাথা ঘোরা থেকে মুক্ত থাকতে
* অতিরিক্ত লবণ ও চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে
* ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করতে হবে
* পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে
* কানের যেকোনো সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
  - আতিউর রহমান

তথ্যসূত্রঃ
http://chandpur-barta.com

search tags: matha ghurar karon, matha ghura roger chikitsha, matha ghorar oushudh, ki shomossha hole matha ghure, hotath matha ghurle ki korbo.

বাতের ব্যাথা নিরাময়ের উপায়


বাত একটি সিস্টেমিক ডিজিজ অর্থাত্ যা কিনা পুরো শরীরে প্রভাব ফেলে। অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমা হয়ে এ রোগের উত্পত্তি হয়। মূত্রের মাধ্যমে যে পরিমাণ স্বাভাবিক ইউরিক এসিড বেরিয়ে যায়, তার থেকে বেশি পরিমাণ ইউরিক এসিড যখন আমাদের যকৃত্ তৈরি করে তখনই তা রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। অথবা খাবারের মাধ্যমে বেশি পরিমাণ ইউরিক এসিডের উত্স যেমন লাল মাংস, ক্রিম, রেড ওয়াইন ইত্যাদি গ্রহণ করলে এবং বৃক্ক (কিডনি) রক্ত থেকে যথেষ্ট পরিমাণে তা ফিল্টার করতে না পারলে বাতের উপসর্গগুলো দেখা দেয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইউরিক এসিড অস্থিসন্ধিতে ক্রিস্টালরূপে জমা হতে থাকে এবং তাতে অস্থিসন্ধি ফুলে যায়, প্রদাহ এবং ব্যথা হয় এবং সেই সঙ্গে অস্থিসন্ধি ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যায়। বাত সাধারণত পায়ের আঙুলের অস্থিসন্ধিকে আক্রান্ত করে।
বিশ্বের অনেক মানুষই বাতের ব্যথায় আক্রান্ত এবং প্রতিদিনই এই সংখ্যা বেড়ে চলেছে আশংকাজনক হারে। বিশেষ করে ধনীদের ক্ষেত্রে এ রোগ বেশি দেখা দেয়। কারণ উন্নতমানের খাওয়া বিশেষ করে মাছ মাংস ইত্যাদি যারা বেশি খান তাদের এ বাতের সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে যারা অলস তাদের ক্ষেত্রেও এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। আবার বাতের ব্যথা মূলত দুই ধরণের কারণে হয়ে থাকে। প্রথমত, বয়স জনিত হাড়ের দুর্বলতা থেকে এবং দ্বিতীয়ত, হাড়ের জয়েন্ট দুর্বল ও হাড়ে ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত কারনে। প্রখমে এটি পায়ের আঙ্গুলে পরে আস্তে আস্তে হাড়সহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বাত আক্রান্তস্থানে প্রচুর গরম অনুভুত হয় এবং অসহনীয় ব্যাথার সৃষ্টি হয়।
রোগের প্রাদুর্ভাব
বাত সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে সাধারণত এটি রজঃনিবৃত্তির পর অর্থাত্ ৪৫ বছরের পর দেখা দেয়। শিশু এবং তরুণদের সাধারণত এ রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না।
কারণ এবং ঝুঁকিগুলো
অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিড জমার কারণেই বাত হয়ে থাকে। শতকরা ২০ ভাগেরও বেশি রোগীর ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বাতরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে। যেসব কারণে বাতরোগের ঝুঁকি বাড়ে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— ডায়াবেটিস, শরীর মোটা হয়ে যাওয়া, কিডনির রোগগুলো, সিকল সেল এনিমিয়া (এক ধরনের রক্তস্বল্পতা)। নিয়মিত অ্যালকোহল পান করলে তা দেহ থেকে ইউরিক এসিড বের করে দেয়ায় বাধা দেয় এবং প্রকারান্তরে বাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিছু কিছু ওষুধ যেমন—অ্যাসপিরিন, বিভিন্ন ডাই-ইউরেটিকস, লিভোডোপা, সাইক্লোস্পোরিন ইত্যাদি অনেক সময় বাতের ঝুঁকি বাড়ায়।

রোগের লক্ষণগুলো
বাতের সমস্যা সাধারণত বৃদ্ধাঙ্গুলিতে প্রথম দেখা দেয়। এর প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে—CXUIDTU
— প্রদাহ
— ব্যথা
— অস্থিসন্ধি লাল হয়ে যাওয়া
— অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
— বাতে পায়ের অঙুল নাড়াতে তীব্র ব্যথা হয়; অনেক সময় রোগীরা বলে থাকে যে, চাদরের স্পর্শেও ব্যথা লাগে। বাতের লক্ষণগুলো খুব দ্রুতই দেখা দেয়, যেমন কখনও কখনও এক দিনের মধ্যেই দেখা দেয় এবং একই সঙ্গে একটি মাত্র অস্থিসন্ধিতে লক্ষণ দেখা দেয়। বিরল ক্ষেত্রে ২-৩টি অস্থিসন্ধিতে এক সঙ্গে ব্যথা হয়। যদি অনেক স্থানে এক সঙ্গে লক্ষণ দেখা দেয়, তবে হয়তো তা বাতের কারণে নাও হতে পারে। তবে চিকিত্সা না করা হলে বাত অস্থিসন্ধির যথেষ্ট ক্ষতি করতে এমনকি চলনক্ষমতাও হ্রাস করতে পারে।

চিকিত্সা
চিকিত্সার মূল লক্ষ্য হচ্ছে অস্থিসন্ধিতে ইউরিক এসিডের পরিমাণ কমিয়ে আনা এবং এর মাধ্যমে রোগের লক্ষণ এবং পরবর্তী অবনতি ঠেকানো। চিকিত্সা না করা হলে বাত অস্থিসন্ধির যথেষ্ট ক্ষতি করতে এমনকি চলনক্ষমতাও হ্রাস করতে পারে। সচরাচর দেখা যায়, ঘন ঘন রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ না পেলে লোকজন এর চিকিত্সা করাতে চায় না। ওষুধের মধ্যে আছে ন্যাপ্রোক্সেন এবং ইন্ডোমিথাসিনের মতো এনএসএআইডি জাতীয় ওষুধ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা এবং সেই সঙ্গে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
প্রেডনিসোলোনের মতো স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও মুখে খাওয়া যেতে পারে অথবা আক্রান্ত স্থানে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালোপিউরিনল, কোলচিসিন এবং প্রোবেনেসিড আলাদাভাবে কিংবা এক সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ওষুধগুলো দ্রুত কার্যকর হয় তখনই, যখন এগুলো রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবহার করা যায়।
প্রতিরোধ
প্রতিরোধই বাতের সমস্যা থেকে উপশমের উত্তম উপায়। রোগ দেখা দিলে ওষুধের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়া যায় বটে, তবে তখন অ্যালকোহল এবং যেসব খাবার গ্রহণ করলে ইউরিক এসিড মজুদ হওয়া বেড়ে যায়, সেসব থেকে দূরে থাকা অবশ্য কর্তব্য।
এছাড়া রোগীকে প্রচুর পানি খেতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে, সুষম খাবার ব্যবহার করার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, রোগ হলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হয়ে তার পরামর্শ মতো চলতে হবে।
এছাড়াও জেনে নিন বাতের ব্যথার কবল থেকে বাঁচার জন্য কার্যকরী কিছু টিপস।

•লিফট বা এস্কেলেটরের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
•প্রতিদিন সকালে উঠে ৫-১০ মিনিট জোরে হাঁটুন বা জগিং করুন।
•গাড়িতে ওঠার আগে কিংবা লম্বা জার্নির শুরুতে অন্তত ৫০০ মিটার পায়ে হেঁটে নিন।
•ওজন কমানোর দিকে মনোযোগী হোন।
•প্রতিদিন ৬-৮ গ্লাস পানি খান।
•ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন পরিমিত পরিমানে খান।
•একটানা অনেকক্ষণ বসে থাকবেন না। ১৫-২০ মিনিট পর পর খানিকটা হেঁটে নিন।
•ধূমপান ও মদ্যপান হাড়ের ক্যালসিয়াম শুকিয়ে দেয়ার জন্য দায়ী। ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করুন।
•প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় দুধ রাখুন। যদি ‘লাক্টোস ইনটলারেন্ট’ হয়ে থাকেন তবে ব্রকলি খান ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পুরনের জন্য।
•প্রতিদিন ব্যায়ামের জন্য অন্তত ১০ মিনিট রাখুন।
•সপ্তাহে অন্তত ২ বার খানিকটা তেল গরম করে নিয়ে হাড়ের জয়েন্টে ম্যাসাজ করুন।
•যারা ব্যথা ভুগছেন তারা আক্রান্ত স্থানে প্রতিদিন গরম তুলা. কাপড় বা পানির সেঁক নিন।

তথ্যসূত্রঃ
www.bd24live.com

search tags: bat betha, bath batha, bater byatha, bat jor, bater betha hole ki korbo, bater betha hole koronio, bater betha keno hoy, bater bethar karon o lokkhon, bater bethar cikitsha, bater bethar oushudh

ডেঙ্গু জ্বর হলে করনীয়


ডেঙ্গুজ্বরঃ

ডেঙ্গুজ্বর কনটেন্টটিতে ডেঙ্গুজ্বর কী, কীভাবে ছড়ায়, ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ, উপসর্গ, ডেঙ্গুজ্বরের ধরন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসা, পথ্য ও বাড়তি সতর্কতা, প্রতিরোধ এই সব বিষয়গুলো সর্ম্পকে বর্ণনা করা হয়েছে।

ডেঙ্গু জ্বর মৃদু বা হাল্কা থেকে মারাত্মক ধরনের হয়ে থাকে। মৃদু ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে তীব্র জ্বর, শরীরে লালচে দানা এবং মাংসপেশী ও হাড়ে ব্যথা হয়। মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বরে (ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম) মারাত্মক রক্তক্ষরণ, রক্তচাপ কমে যাওয়া এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

 
ডেঙ্গুজ্বর কি

ডেঙ্গুজ্বর একধরনের জীবাণু বাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গুজ্বরের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই এবং অধিকাংশ রোগীই আরোগ্য লাভ করে। কিন্তু রোগের মারাত্মক ধরনে আক্রান্ত হলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে।



কিভাবে হয়

এডিস নামে এক ধরনের মশার কামড়ে ডেঙ্গুজ্বর হয়। এই মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়।

ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে কি করে বুঝবেন

রোগের ধরন ও মাত্রা অনুযায়ী ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গ ভিন্ন হয়ে থাকে। ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে সাধারণত: যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায় সেগুলো হলো-

তীব্র জ্বর-১০৫ ফারেনহাইট(৪০.৬ সে.) পর্যন্ত।
সারা শরীরজুড়ে লালচে দানা যা কিছুদিনের জন্য চলে গিয়ে পুনরায় দেখা দেয়।
তীব্র মাথা ব্যথা, পিঠ ব্যথা অথবা দুটোই।
চোখের পিছনে ব্যথা।
অস্থি সন্ধি এবং মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা।
বমি বমি ভাব এবং বমি।



ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর

এটি রোগের মারাত্মক একটি ধরণ। এই জ্বর মৃদু জ্বরের মতোই শুরু হয়। পরবর্তী কিছু দিনের মধ্যেই অবস্থা অধিকতর খারাপ হতে শুরু করে। এই জ্বরে ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গের পাশাপাশি আরো যে সমস্যা গুলো হয়-

রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্যকারী রক্ত কোষের সংখ্যা কমে যায় ফলে
চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ হয় এবং নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।
অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


ডেঙ্গু শক সিনড্রোম

এটি ডেঙ্গুজ্বরের সবচেয়ে মারাত্মক ধরন। এই জ্বরে মৃদু ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গের পাশাপাশি অন্যান্য যে সমস্যা গুলো হয়-

তীব্র পেটে ব্যথা
ঘন ঘন বমি
জ্ঞান হারানো
অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
রক্তচাপ হঠাৎ কমে যাওয়া
এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে


কখন ডাক্তার দেখাবেন

ডেঙ্গুজ্বরের যে কোন লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দেয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।



কোথায় চিকিৎসা করা হয়

জেলা সদর হাসপাতাল
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
বেসরকারী হাসপাতাল
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়


কি কি পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে

সাধারণত লক্ষণ দেখেই ডাক্তাররা বুঝতে চেষ্টা করেন ডেঙ্গু হয়েছে কিনা,তবে এর পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষাও করা হয়ে থাকে। রক্ত পরীক্ষা করে রোগের ধরন ও মাত্রা বুঝা হয়।



কি চিকিৎসা আছে

বেশি করে তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহন
প্যারাসিটামল ওষুধ সেবন
হাসপাতালে রেখে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা
দরকার হলে শিরাপথে স্যালাইন দেয়া
রক্তচাপ পরীক্ষা
রক্ত ঘাটতি পূরণের জন্য রক্ত দেয়া


পথ্য ও বাড়তি সতর্কতা

বমি এবং জ্বর থেকে পানিশূণ্যতা পূরণের জন্য রোগীকে বেশি করে স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার খেতে দিতে হবে।
আক্রান্ত রোগীকে মশারীর ভিতর রাখতে হবে।
কখনোই নিজে থেকে কোন ব্যথানাশক  ঔষধ খাবেন না, তাতে ডেঙ্গুজ্বরের জটিলতা বেড়ে যেতে পারে।


ডেঙ্গুজ্বর কিভাবে প্রতিরোধ করবেন

ডেঙ্গুজ্বরের জীবাণু বহনকারী মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। তাই দিনের বেলা মশারী টাঙিয়ে অথবা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমাতে হবে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে অবশ্যই সবসময় মশারীর মধ্যে রাখতে হবে যাতে করে রোগীকে কোন মশা কামড়াতে না পারে।
বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
বাড়ির আশেপাশে ভাঙ্গা ফুলের টব, ভাঙ্গা ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, ডাবের খোসা, ভাঙ্গা বেসিন, অব্যবহৃত টায়ার, মুখ খোলা পানির ট্যাঙ্ক, প্লাস্টিকের প্যাকেট, পলিথিন এবং ঘরের আশেপাশে যেন পানি না জমে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।


সচরাচর জিজ্ঞাসা

প্রশ্ন.১. ডেঙ্গুজ্বর কেন হয়?

উত্তর.এক ধরনের জীবাণু দিয়ে ডেঙ্গুজ্বর হয়। এডিস নামে এক ধরনের মশা এই রোগের জীবাণু বহন করে।



প্রশ্ন.২. কিভাবে এডিস মশা ডেঙ্গুজ্বরের জীবাণু ছড়ায়?

উত্তর.ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত কোন ব্যক্তিকে  কোন সাধারণ এডিস মশা (যে এডিস মশা ডেঙ্গু ভাইরাসের জীবাণু বহন করছে না) কামড়ালে সেই এডিস মশাটিও ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এই মশা যখন আরেকজন সু্‌স্থ্য মানুষকে কামড় দেয় তখন সেও ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয়।


প্রশ্ন. ৩. ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের ক্ষেত্রে কারা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ?

উত্তর.

সাধারণত শহর অঞ্চলে এই রোগ বেশি দেখা যায়।
যেসব অঞ্চলে গরম বেশি সেখানকার মানুষ ডেঙ্গুজ্বরে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
যারা আগেও ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই রোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।


প্রশ্ন.৪. ডেঙ্গুজ্বর ভালো হতে কতদিন সময় লাগে?

উত্তর.ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত ৫ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।



প্রশ্ন.৫. ডেঙ্গুজ্বরে কি ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে?

উত্তর.ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে সাধারণত: যেসব জটিলতা দেখা দিতে:

জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার পরের কয়েক সপ্তাহ বা মাস পর্যন্ত কোন কোন বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ক্লান্তিবোধ, অবসন্নতা দেখা দেয়।
মারাত্মক ডেঙ্গুজ্বর থেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হতে পারে। এর ফলে যে সমস্যা গুলো হতে পারে সেগুলো হলো-অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ,শক এমনকি এ ধরনের সমস্যা থেকে মৃত্যু।
অনেকসময় সু্‌স্থ্য হলেও  অনেকের যকৃত, রক্তনালী এবং মস্তিস্কের ক্ষতি হতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ
www.infokosh.gov.bd


search tags: dengue fever, dengu fever, dengu jor keno hoy, dengue jorer lokkhon, dengue jorer chikitsha, dengu hole ki korbo, dengue jor hole koronio, adis mosha theke bachar upay.

ডেঙ্গু জরের কারন, লক্ষন ও চিকিৎসা


ডেঙ্গুজ্বর (Dengue)  প্রধানত এশিয়ার গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকার একটি ভাইরাসঘটিত সংক্রামক ব্যাধি। ডেঙ্গু ভাইরাস Flaviviridae গোত্রভুক্ত, যার প্রায় ৭০ ধরনের ভাইরাসের মধ্যে আছে ইয়োলো ফিভার (yellow fever) ও কয়েক প্রকার এনসেফালাইটিসের ভাইরাস। ডেঙ্গুজ্বরের অনুরূপ একটি রোগের মহামারীর প্রথম তথ্য পাওয়া যায় ১৭৭৯ ও ১৭৮০ সালে চিকিৎসা সংক্রান্ত বইপুস্তকে। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কলকাতায় প্রথম ডেঙ্গুজ্বর শনাক্ত হয়। ১৮৭১-৭২ সালে এ রোগ মহামারী আকারে দেখা দেয়। ওই সময় থেকে এ রোগের প্রকোপ এ উপমহাদেশে প্রায়শই ঘটে। ১৯৩৯-৪৫ সাল থেকে গোটা মহাদেশে ১০ থেকে ৩০ বছর পর পর ডেঙ্গুজ্বর দেখা দিতে থাকে। কোনো একটি বিশেষ স্থানে বারবার ডেঙ্গুর মহামারী দেখা দিত না। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বহু ডেঙ্গু ভাইরাস সেরোটাইপের সহসঞ্চালন দেখা দেয় এবং মহামারীর ঘটনা বৃদ্ধি পায়। ক্যারিবীয় অঞ্চল (১৯৭৭-১৯৮১), দক্ষিণ আমেরিকা (১৯৮০ সালের শুরুতে), প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল (১৯৭৯) এবং আফ্রিকায় ব্যাপক আকারে ডেঙ্গু মহামারী দেখা দেয় যাতে লক্ষ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়। রক্তক্ষরা ডেঙ্গুজ্বর (dengue haemorrhagic fever/DHF) এবং ডেঙ্গু শক (shock) সিনড্রমের (DSS) প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটে ১৯৫৩-৫৪ সালে ম্যানিলায় এবং ১৯৭৫ সালের মধ্যে নিয়মিত বিরতিসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশির ভাগ দেশে। ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালে মহামারী আকারে রক্তক্ষরা ডেঙ্গু ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পূর্বদিকে চীনে ছড়িয়ে পড়ে। রক্তক্ষরা ডেঙ্গুজ্বর ও শক-সিনড্রম ডেঙ্গু এখন এশিয়ায় হাসপাতালে ভর্তি ও শিশুমৃত্যুর একটি প্রধান কারণ।


ডেঙ্গুজ্বরের বাহক মশা
চার প্রকারের ডেঙ্গু ভাইরাস DEN 1, 2, 3, 4 হলো ডেঙ্গু ও রক্তক্ষরা ডেঙ্গুর কারণ এবং এগুলি প্রতিজনীভাবেও (antigenic) ঘনিষ্ঠ। যে কোনো একটি সেরোটাইপ বিশেষ কোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে আজীবন প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়, কিন্তু অন্য ভাইরাসগুলির বিরুদ্ধে নয়। উষ্ণমন্ডলীয় ও উপ-উষ্ণমন্ডলীয় শহরাঞ্চলীয় চক্রেই ডেঙ্গু ভাইরাস স্থিতি লাভ করে। এজন্যই শহুরে লোকদের মধ্যেই রোগটি বেশি। মানুষের আবাসস্থলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দিনের বেলায় দংশনকারী Aedes aegypti মশা এসব ভাইরাসের বাহক। কোনো কোনো অঞ্চলে অন্যান্য প্রজাতি Aedes albopictus, A. polynesiensis মশাও সংক্রমণ ঘটায়। রোগীকে দংশনের দুই সপ্তাহ পর মশা সংক্রমণক্ষম হয়ে ওঠে এবং গোটা জীবনই সংক্রমণশীল থাকে।

রোগের লক্ষণ ১. ডেঙ্গুজ্বর ডেঙ্গু-ভাইরাসের সংক্রমণ উপসর্গবিহীন থেকে নানা রকমের উপসর্গযুক্ত হতে পারে, এমনকি তাতে মৃত্যুও ঘটে। সচরাচর দৃষ্ট ডেঙ্গুজ্বর, যাকে প্রায়ই ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু বলা হয়, সেটি একটি তীব্র ধরনের জ্বর যাতে হঠাৎ জ্বর হওয়া ছাড়াও থাকে মাথার সামনে ব্যথা, চক্ষুগোলকে ব্যথা, বমনেচ্ছা, বমি এবং লাল ফুসকুড়ি। প্রায়ই চোখে প্রদাহ এবং মারাত্মক পিঠব্যথা দেখা দেয়। এসব লক্ষণ ৫-৭ দিন স্থায়ী হয় এবং রোগী আরও কিছুদিন ক্লান্তি অনুভব করতে পারে এবং এরপর সেরে ওঠে।

বেশির ভাগ সংক্রমণই, বিশেষত ১৫ বছরের কমবয়সী শিশুর ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণ লক্ষণহীন অথবা ন্যূনতম লক্ষণযুক্ত হতে পারে। ত্বকে স্ফোট দেখা দেয় প্রায় ৫০% ক্ষেত্রে, যা প্রথমে হাতে, পায়ে এবং পরে ঘাড়ে ছড়ায়। জ্বর চলাকালীন সময় মুখ, গলা বা বুক রক্তাভ দেখায়।

২. রক্তক্ষরা ডেঙ্গুজ্বর (DHF)  দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধানত শিশুদের একটি রোগ। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু হলো ডেঙ্গুর একটি মারাত্মক ধরন। মূল লক্ষণগুলি বয়স নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রেই অভিন্ন। এ ডেঙ্গুজ্বরের শুরুতে হঠাৎ দেহের তাপ বেড়ে যায় (৩৮০-৪০০ সে) এবং ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত চলে। রক্তক্ষরণ বা ডেঙ্গু-শক সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেখা দেয়। এতে থাকে মাথাব্যথা, ক্রমাগত জ্বর, দুর্বলতা এবং অস্থিসন্ধি ও মাংসপেশীর তীব্র ব্যথা। শ্বাসযন্ত্রের ঊর্ধ্বাংশের সংক্রমণসহ রোগটি হালকাভাবে শুরু হলেও আচমকা শক ও ত্বকের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ ও কান দিয়ে রক্তপাত শুরু হয়ে যায়। রক্তে ক্রমাগত অনুচক্রিকা কমতে থাকে এবং রক্তের বর্ধমান রক্তবিকেন্দ্রক (haematocrit) প্রবণতা থেকে আসন্ন শকের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরোগীর প্রয়োজন উত্তম সেবাশুশ্রূষা ও পর্যবেক্ষণ, কেননা উপরিউক্ত পরিবর্তনগুলি খুব দ্রুত ঘটতে পারে এবং রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে উঠতে পারে।

৩. ডেঙ্গু-শক সিনড্রম (DSS) এটি রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরই আরেকটি রকমফের, তাতে সঙ্কুচিত নাড়িচাপ, নিম্ন রক্তচাপ অথবা সুস্পষ্ট শকসহ রক্তসঞ্চালনের বৈকল্য থাকে। দেহের বাইরে থেকে যকৃত স্পর্শ করা যায় ও নরম হয়ে ওঠে এবং উৎসেচকগুলিতে সাধারণত অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তবে কদাচিৎ জন্ডিস হয়ে থাকে। অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে অব্যাহত পেটব্যথা, থেকে থেকে বমি, অস্থিরতা বা অবসন্নতা এবং হঠাৎ জ্বর ছেড়ে ঘামসহ শরীর ঠান্ডা হওয়া ও দেহ সম্পূর্ণ নেতিয়ে পড়া।

মহামারী  নতুন জাতের ভাইরাস ও সেরোটাইপ (serotypes) দেখা দেওয়ায় ডেঙ্গুর মহামারী আক্রান্ত দেশের সংখ্যা ১৯৮০ ও ১৯৯০ সালের মধ্যে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৮০ সালের পূর্বে মারাত্মক ধরনের সংক্রমণ খুব কমই দেখা গেছে। কিন্তু ১৯৯৭ সালের মধ্যেই রক্তক্ষরা ডেঙ্গু বাংলাদেশসহ উষ্ণমন্ডলীয় ও উপ-উষ্ণমন্ডলীয় দেশগুলিতে একটা স্বতন্ত্র রোগ হিসেবে বড় কয়েকটি এবং ছোট ছোট অনেকগুলি মহামারী ঘটায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী  বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। প্রতি বছর আক্রান্ত প্রায় ৫০ লক্ষ রোগীর মধ্যে অন্তত ৫ লক্ষ রক্তক্ষরা ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় যাদের একটা বড় অংশই শিশু এবং মারা যায় শতকরা প্রায় পাঁচ জন। বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর এ পুনরাবির্ভাব এবং রক্তক্ষরা ডেঙ্গু উৎপত্তির মূলে আছে নজিরবিহীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত ও অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ণ, বিমান ভ্রমণ বৃদ্ধি, মশক দমনের অভাব এবং গত ৩০ বছরে জনস্বাস্থ্যের কাঠামোর অবনতি।

বাংলাদেশে ডেঙ্গু একটি পুনরাবির্ভূত রোগ হিসেবে গণ্য। সাম্প্রতিক (২০০০) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন মোতাবেক এদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বিস্ফোরক পর্যায়ে আছে। ১৯৮২-৮৩ সালের মধ্যে পরিচালিত ঢাকা মহানগরের স্কুলের শিশুদের মধ্যে পরিচালিত এক জরিপে সর্বমোট ২,৪৫৬ রক্তের নমুনার মধ্যে ২৭৮টিতে ডেঙ্গুর লক্ষণ ধরা পড়ে। ১৯৮৪-৮৬ সালে ঢাকা শহরের হাসপাতাল থেকে সংগৃহীত রক্তের ২১টি নমুনার সবগুলিতেই সংক্রমণের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল।

১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসা প্রায় ১১% রোগীর (২৫০ জনের মধ্যে ২৭ জন) মধ্যে ডেঙ্গু অ্যান্টিজেনের পজিটিভ অ্যান্টিবডি টাইটার (titre) ধরা পড়েছিল। ১৯৯৯ সালে ঢাকার মহাখালির Institute of Epidemiology, Disease Control and Research (IEDCR) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো সন্দেহজনক রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪১টির মধ্যে ৯৮টিতে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব পেয়েছিল। উক্ত ইনস্টিটিউট প্রদত্ত বিস্তারিত তথ্যে এগুলির মধ্যে কয়েকটি রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরও তথ্য ছিল। ঢাকা শহরের চিকিৎসকদের দেওয়া তথ্য থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রক্তক্ষরা ডেঙ্গুর অস্তিত্বের কথা জানা গেছে।

ভাইরাসবিদ, চিকিৎসক ও হাসপাতাল সূত্র থেকে ঢাকা শহরে আতঙ্কগ্রস্ত হারে ডেঙ্গুরোগ বিস্তারের আভাস পাওয়া গেছে। জুলাই ২০০০ সালের প্রথম দুই সপ্তাহে  বারডেম, শিশু হাসপাতাল ও  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ৭৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছিল। শিশুসহ মৃত সাত জনের মধ্যে ছয় জন এ তিনটি হাসপাতালের এবং এক জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী। বারডেম হাসপাতালের রোগপ্রতিরোধ বিভাগ ছয় দিনে ৩১টি রোগের ঘটনা শনাক্ত করেছিল এবং তা আকস্মিক বৃদ্ধি হিসেবে অভিহিত হয়েছিল। ঢাকা শিশু হাসপাতালে জুলাই ২০০০ সালের প্রথমার্ধে ৯০টি ডেঙ্গুর ঘটনা ধরা পড়ে। ঢাকার মতো একটি জনাকীর্ণ শহরে ডেঙ্গুবাহক মশার আকস্মিক প্রকোপ খুবই উদ্বেগজনক, কেননা এখানে মশার অবাধ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ আছে।

বিশেষজ্ঞরা আশা করেছিলেন যে ২০০০ সালের শেষে শীতকাল শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে আসবে, কিন্তু দেখা গেল নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়ে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলিতেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী ২০০০ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৯০ জন রোগী মারা গেছে, যদিও বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। ঢাকা নগরীর ক্লিনিকগুলিতেই কেবল নভেম্বর মাসে কমপক্ষে ১,০০০ রোগী ভর্তি হয়েছিল। বলা হয়েছে, দেশ থেকে রোগ দূর হতে দেরি হবে এবং সংক্রমণ আরও কয়েক মাস চলবে। Aedes মশার সংখ্যা এখনও অত্যধিক এবং ‘যতদিন না এ মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ততদিন ডেঙ্গু টিকে থাকবে’ বলেছেন রোগনিয়ন্ত্রকরা। ২০০১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ঢাকা শহরের অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বহু ডেঙ্গু রোগীর ভর্তি হওয়ার কথা জানা যায়। ২০০২ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ঢাকা শহরে আবার ব্যাপকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। এখানে এ দুই মাসে হাসপাতালে ভর্তিকৃত প্রায় ৪০০০ রোগীর মধ্যে মারা যায় প্রায় ৪৪ জন।

রোগসংক্রমণ  Aedes aegypti মশা জনবসতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকেই বংশবৃদ্ধি করে। এদের লার্ভা বেশির ভাগই পরিত্যক্ত টায়ার, বালতি, ফেলে দেওয়া নারিকেলের খোল, ফুলদানি, ফুলের টবের নিচের থালায় জমে থাকা পানিতে, এমনকি জমে থাকা গাছের গর্তে এবং এ ধরনের অন্যান্য প্রাকৃতিক স্থানে বড় হয়। পূর্ণবয়স্ক মশা সাধারণত ঘরের ভিতর অন্ধকার জায়গায়– আলমারি, বিছানা বা খাটের তলায় থাকতে পারে। এ প্রজাতি দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে, বেশির ভাগ কামড়ের ঘটনা ঘটে সকালের প্রথম দিকে বা বিকালের শেষে। কোনো আক্রান্ত লোকের রক্ত খেয়ে থাকলেই মশা সংক্রমিত হয় এবং ১০-১২ দিনের নির্ধারিত উপ্তিকাল যাপনের পর সংক্রমণ ক্ষমতা      অর্জন করে। মশা সংক্রমনক্ষম হয়ে উঠলে লোকের শরীর থেকে রক্ত শোষণের সময় এমনকি ত্বকে শুঁড় ঢুকালেও ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটতে পারে।

ডেঙ্গুবাহক নিয়ন্ত্রণ ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ঔষধ বা প্রতিষেধক নেই। দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাই কেবল রোগের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। সাধারণত ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুর বিরুদ্ধেই দেহের রোগপ্রতিরোধ সামর্থ্য থাকে, কিন্তু রক্তক্ষরা ডেঙ্গুতে বেশির ভাগ রোগীই মারা যায়। তাই মশার বিরুদ্ধেই নিয়ন্ত্রণ পরিচালিত হওয়া আবশ্যক। বাংলাদেশে ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণের তেমন উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম নেই। দেশের কোনো কোনো শহরে মশা নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম থাকলেও তা Aedes মশার বিরুদ্ধে নয়। এ জাতের মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন, কারণ এগুলি পানিভরা পাত্রে বৃদ্ধি পায়, তাই কীটনাশক ছড়িয়ে সুফল ফলে না। ঘরের চারদিকে স্প্রে করা অথবা খুব সকালে বা সন্ধ্যার শেষে ঘরে বিষ ধোঁয়া (aerosol) দিলে দিনের বেলা দংশনকারী ‘এইডিস’ মশা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।

মশার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সহজসাধ্য নয়। কিন্তু নাগরিকরা মশা বৃদ্ধির অকুস্থল যেমন পরিত্যক্ত পাত্র, টায়ার, নারিকেলের বা ডাবের খোসা ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে এবং বাসস্থানের আশপাশ থেকে জমা পানি নিষ্কাশন করতে পারেন। নগরে অসংখ্য বস্তি থাকায় এ কার্যক্রম অত্যন্ত কঠিন। কার্যকর ও টেকসই নিবারণ ব্যবস্থার জন্য ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অবশ্যই স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্তি আবশ্যক।  [এস.এম হুমায়ুন কবির]

তথ্যসূত্রঃ
http://bn.banglapedia.org

search tags: dengue fever, dengu fever, dengu jor, dengu jorer lokkhon, dengue jorer karon, dengue jor hole koronio, dengu jorer chikitsha, dengu hole ki korbo, dengu jor kivabe hoy.

Thursday, August 27, 2015

লম্বা হওয়ার জন্য যে সকল ব্যায়াম করা দরকার


জিনতত্ত্বের উপর ভিত্তি করে আমরা বেশিরভাগ মানুষ ভেবে থাকি যে আমদের বৃদ্ধি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমাদের বংশের উপর। অর্থাৎ আমরা বংশগত ভাবে ঠিক যতটুকু বৃদ্ধি পাবো তার থেকে এক চুলও বেড়ে উঠা সম্বভ নয়। তবে বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত যে আপনার বৃদ্ধির ৮০% নির্ভর করে আপনার বংশের উপর। আর বাকি ২০% ই আপনার উপর বা অন্যান্য কিছু কৌশল বা পরিবেশের উপর। তাহলে দাঁড়ায় যে যদি একজন ব্যক্তির উচ্চতা হয় ৫ফুট তাহলে তার উচ্চতা ২০% করলে হয় ১ফুট আর এর থেকে পরিবেশ গত ভাবে ৬ ইঞ্চি ধরলেও আরও ৬ইঞ্চি নিজে বাড়ার জন্য থেকে যায়।

The School of Medicine of the University of Southern California in Los Angeles এর একদল চিকিৎসক যাদের দলনেতা ডঃ মিচেল ই জেনিফার, তারা কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা চালিয়ে একটি চূড়ান্ত উচ্চতার পূর্বাভাস সূত্র প্রকাশ করেছেন। তা হলঃ- মেয়েদের জন্য: [(পিতার উচ্চতা - 5 ইঞ্চি) + মা এর উচ্চতা] দুই দ্বারা বিভক্ত ছেলেদের জন্য: [(মায়ের উচ্চতা + 5 ইঞ্চি) + পিতার উচ্চতা] দুই দ্বারা বি ভক্ত সহজ স্বাভাবিকভা উপায়ে উচ্চতা বৃদ্ধি

১. এই বৃদ্ধি পদ্ধতিটি সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এই পদ্ধতিতে ইঞ্জেকশন দ্বারা মানবদেহে হরমোন বৃদ্ধি করা হয়, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ বেআইনি যার কারনে একজন ডাক্তার কখনই আপনাকে এরকম কিছু প্রেস্ক্রাইব করবে না, এবং এটি খুবই ব্যায়বহুল যার কারনে আমিও আপনাকে সাজেশ করব না।

২. দুধ পান আপনাকে লম্বা হওয়ায় অনেক সাহায্য করবে কারণ ক্যালসিয়াম আপনার শরীররের হাড় এর বৃদ্ধি ঘটায়, আরেকটা বেপার যা আমাদের দেশে নেই সেটা হল আমেরিকায় তাদের গরু মধ্যে বিভিন্ন হরমোন ইনজেকশন দেওয়া হয় যার মাধ্যমে - হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি হয়, এবং সেই প্রকিয়াজাতকরন দুধ হয় সাধারণ দুধ এর বিকল্প।

৩. নিয়মিত কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম (ওজন উদ্ধরণ) হরমোন (HGH) বৃদ্ধি করে। এটি বৃদ্ধি সংক্রান্ত হরমোনের মাত্রা আরও উন্নত করার জন্য বহুল পরিচিত এবং পদ্ধতি খুবই কার্যকর. আর অতিরিক্ত পেশী আপনাকে আরো সাহয্য করবে আকর্ষণীয় চেহারার অধিকারী হতে।

৪. তীব্র sprinting ব্যায়াম মানব বৃদ্ধির হরমোনে একটি বিস্ফোরণ ঘটায় এছাড়াও আপনার হরমোনকে আরও উন্নত করে। আসলে, যে কোনো কঠিন শারীরিক ব্যায়াম আপনাকে লম্বা হতে সাহায্য করবে। তবে অবশ্যই সেটা ২১বছর বয়স হওয়ার পর।

৫. Niacin supplementation : Niacin একটি প্রাকৃতিক ভিটামিন নামক ভিটামিন B3. একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, ৫০০গ্রাম নিয়াসিন নেওয়া মানুষের থেকে সাধারণ মানুষের বৃদ্ধি কম ঘটে।

৬.মানসিক চাপ কমানঃ স্ট্রেস বা মানসিক চাপ যা হচ্ছে আপনার লম্বা বৃদ্ধি হওয়ার ক্ষেত্রে একটি বাঁধা। যাতে আপনার হরমোনের মাত্রা কমে যায় এবং করটিসল উত্পাদিত হয়। ভিটামিন C সম্পূরকসমূহ যা করটিসল কমাতে জোর সহায়তা করে।

৭. ঘুমঃ কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘমানো । এটি সবচেয়ে সহজ এবং অনেক কার্যকরী উপায়। সঠিক এবং সুন্দর ভাবে ঘোমানো আপনার দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি মাত্রা আরো বাড়িয়ে তোলে।

তথ্যসূত্রঃ
www.answersbd.com

search tags: lomba hobar byam, tall hobar beam, lomba hobar exercise, kirokom byam korle lomba howa jabe.

কি কি খাবার খেলে দ্রুত লম্বা হওয়া যায়


জেনে রাখা ভাল লম্বা হওয়ার ব্যপারটি সম্পূর্ণ জেনেটিক। একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত মানবদেহের বৃদ্ধি ঘটে, এমনকি উচ্চতা বাড়ে।তবে এর সঙ্গে অবশ্যই ব্যাপারটি নির্ভর করে খাওয়া দাওয়ার ওপর। পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক বৃদ্ধি ঘটে না দেহের। আবার এমন কিছু খাবার আছে, যারা দেহের বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।জেনে নিই এমন কিছু অসাধারণ খাবারের নাম-

ডিম:
ডিম একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে প্রোটিন এবং ভিটামিন প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এর ফলে শরীরের বৃদ্ধি হয়ে থাকে এবং লম্বা হওয়া সম্ভব।

আপেল:
আপেলে থাকা ফাইবার এবং পানি বাচ্চাদের লম্বা হতে সাহায্য করে থাকে। তাই প্রতিদিন খাবারের আধা ঘন্টা আগে একটি করে আপেল খেতে দিন।

আভাকাডো:
দুপুরে খাবার সময়ে অর্ধেকটা আভাকাডো দেহে বিভিন্ন পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে। এতে করে এটি লম্বা হতে সহায়তা করে থাকে।

স্যুপ:
স্যুপ স্বাস্থ্য উপযোগী একটি খাবার। এতে ক্যালরি রয়েছে যা খিদে বাড়িয়ে দেয়। ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ফলে কোষ বৃদ্ধি করে লম্বা করে তোলে।

মটরশুটি, ছোলা, মুসুর:
এই ধরনের খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ভিটামিন বি এবং আয়রন রয়েছে যেগুলো শরীরের কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। ফলে লম্বা হতেও সাহায্য করে থাকে।

ডার্ক চকলেট:
বাচ্চাদের এমনিতে চকলেট খেতে দেয়া হয় না। কিন্তু ডার্ক চকলেট বাচ্চাদের লম্বা করতে সহায়তা করে। এতে থাকা ক্যালরি কোষ বৃদ্ধি করে লম্বা করতে সহায়তা করে।

বাদাম:
বাদাম বা কাজুবাদামও স্বাস্থ্য উপযোগী একটি খাবার। এটিতে থাকা বিভিন্ন প্রোটিন, ভিটামিন দেহের বিভিন্ন পুষ্টি যোগায়, এবং লম্বা হতেও সহায়তা করে।

তথ্যসূত্রঃ
www.eurobdnews.com

search tags: ki khabar khele lomba howa jay, ki khele lomba hobo, lomba hobar upay, lomba hobar tips. 

লম্বা হবার সহজ কৌশল


গবেষণায় দেখা যায় উচ্চতার উপর প্রায় ২০% প্রভাব থাকে আমাদের পরিবেশ, খাদ্যাভ্যাস ও আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ। সুতরাং এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে আমরা বাড়াতে পারি আমাদের দেহের উচ্চতা। চলুন তাহলে আজকে জেনে নেয়া যাক লম্বা হবার উপায় :

১) পরিমিত পরিমাণে ঘুম ও বিশ্রাম
আমরা সকলেই জানি ঘুমের সময় আমাদের দেহ গঠনের টিস্যুগুলো কাজ করে। এরফলে আমাদের উচ্চতা ও শারীরিক গঠন বৃদ্ধি পায়। হিউম্যান গ্রোথ হরমোন প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের দেহে উৎপন্ন হতে থাকে যখন আমরা পরিমিত পরিমাণে ঘুমাতে পারি এবং বিশ্রাম নিতে পারি। তাই বয়স অনুযায়ী ৮-১১ ঘণ্টা ঘুম ও বিশ্রাম দেয়ার চেষ্টা করুন নিজেকে। প্রাকৃতিক উপায়ে এটিই সবচাইতে ভালো পদ্ধতি উচ্চতা বৃদ্ধি করার।

২) নিয়মিত ব্যায়াম এবং খেলাধুলা
ছোটবেলা থেকেই যারা অনেক বেশি খেলাধুলা করে থাকে এবং সুঠাম দেহের অধিকারী হয় তাদের উচ্চতা অন্যান্যদের তুলনায় একটু বেশি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এছাড়াও সাতার, আরোবিক্স, টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবলের মতো খেলার মাধ্যমে ও হাঙ্গিং, স্ট্রেচিং ধরণের ব্যায়াম দেহের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ সহায়ক। কারণ যারা অনেক বেশি খেলাধুলা এবং ব্যায়াম করেন ও যারা সুঠাম দেহের অধিকারী তারা স্বভাবতই একটু বেশি এবং পুষ্টিকর খাবার খান। এতে করে দুটো ব্যাপারই কাজ করে উচ্চতা বৃদ্ধিতে।

৩) যোগব্যায়াম
যোগব্যায়ামের অভ্যাস উচ্চতা বৃদ্ধিতে বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে। যোগব্যায়াম আমাদের দেহে ঘুমের সময় যে গ্রোথ হরমোনের নিঃসরণ ঘটায় তা উৎপন্ন করে এবং আমাদের উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ট্রাইঅ্যাঙ্গেল পোজ, কোবরা পোজ, মাউন্টেইন পোজ, প্লিজেন্ট পোজ, ট্রি পোজ ইত্যাদি ধরণের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সহায়ক।

৪) দেহের সঠিক অঙ্গবিন্যাস
হাঁটাচলা করা এবং বসার সময় সঠিকভাবে ঘাড় ও মেরুদণ্ড সোজা রেখে হাঁটা ও বসা এবং শোয়ার সময় ঘাড় বেশি বাঁকা না করে মেরুদণ্ডের প্রায় সমান্তরালে রাখার মতো অঙ্গবিন্যাসও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

৫) সুষম খাদ্যাভ্যাস
উচ্চতা বৃদ্ধিতে সব চাইতে সহায়ক হচ্ছে সুষম খাবার খাওয়ার অভ্যাস। পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দেহের হাড় ও কোষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি আমাদের দেহে গ্রোথ হরমোন উৎপন্ন করে, ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠন এবং হাড় মজবুত করে, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং কার্বোহাইড্রেট কোষ গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও খাবার হজম এবং পুরো দেহে পুষ্টি পৌঁছানোর ব্যাপারটিও উচ্চতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাই সুষম খাবার নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন।

৬) উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাঁধা প্রদান করে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন
জাংক ফুড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, অতিরিক্ত চিনি ইত্যাদি ধরণের খাবার, ধূমপান ও মদ্যপান করার অভ্যাস, রাতে না ঘুমানো ইত্যাদি আমাদের দেহে গ্রোথ হরমোন তৈরিতে বাঁধা প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে ধূমপান এবং মদ্যপানের অভ্যাস যদি বাবা-মায়ের থেকে থাকে তবে তার প্রভাব সন্তানের উপরেও পড়ে। তাই এইসকল কাজ থেকে বিরত থাকুন।

তথ্যসূত্রঃ
munshiganjtimes.com


search tags:  lomba hobar upay, taller hobar upay, kivabe lomba hobo, sharirik ucchota briddhir jonno koronio, lomba hote hole ki korte hobe, lomba hobar tips.

Saturday, August 1, 2015

স্থূলতা বা ওবেসিটি নিয়ন্ত্রনের উপায়



স্থূলতা আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা লোপ করে, বিভিন্ন রোগ সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার বাড়িয়ে দেয়। ওবেসিটি বংশগত, পারিপার্শ্বিক এবং মানসিক অবস্থার ওপরও নির্ভর করে। ওবেসিটি একটা অস্বাভাবিকতা যেখানে শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। খাদ্য গ্রহণ করার ফলে যে শক্তি তৈরি হয় তা শরীরের শক্তি ক্ষয়ের চেয়ে বেশি হয় এবং এই বেশি শক্তি (চর্বি) ট্রাইগ্লিসারাইড হিসেবে চর্বি কোষ, টিস্যুতে জমা হয়। এই শক্তি তৈরি ও খরচ হওয়া নির্ভর করে স্নায়ু এবং হরমোনাল স্বাভাবিক ভারসাম্যের ওপর।

স্থূলতা বা ওবেসিটি হচ্ছে বয়স, উচ্চতা লিঙ্গ অনুসারে শরীরের চর্বি বা ফ্যাট টিস্যু জমার আধিক্য। শরীরে খুব বেশি ফ্যাট বা চর্বি জমাকেই ওবেসিটি বলে। ফ্যাট বা চর্বির ঘনত্ব নির্ণয় করা হয় বিভিন্নভাবে :
* বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) = BMI/ Weight in kg/Height in m2 (IRb/ˆ`N©¨)2
* এসএফটি চামড়ার ঘনত্ব (স্কিনফোল্ড থিকনেস), যাকে এনথ্রোপমেট্রিও বলে।
* এইচডব্লিউআর (হিপ ওয়েস্ট রেশিও)।
* পানির নিচে ওজন নেয়া।
ওবেসিটি রোগ নির্ণয়ে বিএমআই ও এইচডব্লিউআর বেশি প্রচলিত। প্রাপ্তবয়স্ক পুুরুষ বা মহিলার সব ধরনের উচ্চতা ও ওজনের মধ্যে বিএমআই রেঞ্জ হল ১৯-২৬। একই বিএমআই হলেও মহিলাদের পুরুষদের চেয়ে শরীরে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে। বিএমআই ৩০ হল স্থূলতার জন্য কাট অফ পয়েন্ট মহিলা ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই। যদি বিএমআই ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে থাকে তাহলেও চিকিৎসাগতভাবে ধরে নিতে হবে মেদস্থূল এবং এটা তাৎপর্যপূর্ণ; এদের ওজন কমানোর এবং চিকিৎসা গ্রহণের জন্য বলতে হবে। অনেক বড় ধরনের ইপিডেমিওলজিক্যাল স্ট্যাডি করে দেখা গেছে, সব ধরনের মেটাবলিক ক্যান্সার, হৃৎপিণ্ড ও রক্তনালীর অসুখের কারণে ভোগান্তি শুরু হয় এবং এগুলো বাড়তে থাকে বিএমআই ৩০-এর ওপরে গেলে।
স্থূলতা বা ওবেসিটির লক্ষণ
ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা : মেদস্থূল পুরুষ বা মহিলা ঘুমের মধ্যে নাক ডাকে, মুখ হা করে ঘুমোতে থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় বেশ জোরে শব্দ হয়।
হার্টবার্ন : মেদস্থূল রোগীদের বুক জ্বালাপোড়া করে গ্যাস্ট্রোএসোফেজিয়াল রিফ্যাক্সের কারণে। পাকস্থলী থেকে খাদ্যদ্রব্য, এসিড খাদ্যনালীতে চলে আসতে পারে, এ জন্য বুক জ্বালাপোড়া করে যাকে হার্টবার্ন বলে।
বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা : ওজন বেশি হওয়ার কারণে ওয়েট বিয়ারিং জয়েন্টে যেমন হাঁটু, কোমর, গোড়ালিতে ব্যথা হয়। এ ছাড়া এসব জয়েন্টে প্রদাহ হওয়ার জন্য, ইউরিক এসিড ক্রিস্টাল জমা হওয়ার জন্য ব্যথা হতে পারে।
বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি ও জটিলতা : মেদস্থূলতার কারণে অন্যান্য রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়- যেমন ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, লিপিড অ্যাবনরমালিটিজ, ক্যান্সার ইত্যাদি। এসব রোগের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন উপসর্গও প্রকাশ পেতে পারে।
কারণ
বংশগত সম্পৃক্ততা : একই পরিবারের বহু সদস্য আক্রান্ত হয় মনোজাইগোটিক টুইন (৭৪%), ডাইজাইগোটিক টুইন (৩২%) মেদস্থূল হওয়ার প্রবণতা বেশি হবে। একই পরিবেশে বসবাসরত, সদস্যদের মধ্যে কেউ মেদস্থূল আবার কেউ স্বাভাবিক। ওবেসিটি জিন শনাক্ত করা গেছে। লেপটিন ঙই মবহব-এর প্রডাক্ট। যেমন ইঁদুরের লেপটিন জিন মিউটেশান হয়, ফলে লেপটিন নিঃসরণ করে না তারা খুব স্থূল বা মোটা হয়। আবার লেপটিন বাইরে থেকে সরবরাহ করলে এরা শুকিয়ে যায়।
অন্য সিনড্রোম, যা ওবেসিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত : উল্লেখযোগ্য হল প্রাডর উইলি সিনড্রোম এবং লরেন্স মুন বিডেল সিনড্রোম।
অন্যান্য স্পেসিফিক সিনড্রোম : কুশিং সিনড্রোম, হাইপোথায়রেডিজম ইনসুলিনোমা, ক্রানিয়োফারিনজিওমা ও হাইপোথালামাসের অন্যান্য ডিজঅর্ডারের সঙ্গে ওবেসিটি সম্পৃক্ত।
যেসব রিস্ক ফ্যাক্টর ওবেসিটি করে এবং নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
* বেশি বেশি খাওয়া বা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করা। প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০০ ক্যালরি থেকে বছরে ১০ পাউণ্ড (৪.৫ কেজি) ওজন বাড়বে।
* বেশি চর্বিযুক্ত খাওয়া যা বেশি ক্যালরি শরীরে যোগ করে, যদিও পরিমাণ মতো খাওয়া হয়।
* খুব কায়িক পরিশ্রম বাদ দিয়ে (অল্প ক্যালরি ক্ষয় হবে) বেশি কায়িক পরিশ্রম করা, যাতে বেশি ক্যালরি ক্ষয় হয়।
* দুশ্চিন্তা, অবসাদ, ক্লান্তি, ডিপ্রেশান বেশি খেতে উদ্বুদ্ধ করে- এগুলো যথাযথভাবে বর্জন করা, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
* মদপান (বিয়ার এবং কিছু পানীয় খুব বেশি ক্যালরি থাকে) পরিহার করা। মদপান করলে বেশি ক্যালরি শরীরে জমা হয়, তা সাধারণত চর্বি হিসেবে পেটে জমা হয়।
* ওষুধ যেমন এন্টিডিপ্রেসেন্ট বা স্টেরয়েড সাধারণত ওজন বৃদ্ধি করে। একান্ত প্রয়োজন না হলে এগুলো গ্রহণ না করা।
চিকিৎসা
* আচার-আচরণ পরিবর্তন : দুশ্চিন্তা, স্ট্রেস ইত্যাদি সম্পৃক্ততার কারণে ক্ষুধা বেশি হচ্ছে কি না বা খাওয়া বেশি হচ্ছে কি না এগুলো নির্ণয় করতে হবে। প্রয়োজনে ডায়েটিসিয়ান, সাইক্রিয়াট্রিস্ট এবং এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও খাওয়ার তালিকা ঠিক করে নিন।
* খাদ্য : খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন- কম ক্যালরি খাওয়া। উদ্দেশ্য হল খাবার থেকে যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি শরীরে প্রবেশ করছে তা যেন যে পরিমাণ ক্যালরি বা শক্তি ক্ষয় হয় তার চেয়ে কম হয়। এ জন্য বয়স, উচ্চতা, লিঙ্গ অনুযায়ী ডায়েট চার্ট দেখে দৈনিক কতটুকু খাওয়া প্রয়োজন ততটুকু খেতে হবে। চর্বিসমৃদ্ধ, পোলাও, কোর্মা, রোস্ট, ফাস্টফুড, থাই ফুড, চায়নিজ ফুড, পিৎজা, জুস, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়া সীমিত করতে হবে। প্রচুর পরিমাণ পানি, তাজা ফলের রস খেতে হবে। ধূমপান, মদপানের অভ্যাস থাকলে বাদ দিন।
ষ শারীরিক পরিশ্রম, ব্যায়াম : প্রতিদিনই কিছু ব্যায়াম, বেশি হাঁটা, চলাফেরা ও কায়িক পরিশ্রম করার অভ্যাস করতে হবে। এতে যেমন ওজন কমবে, চর্বি পুড়ে যাবে এবং কতগুলো জটিল রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থাইটিসের প্রকোপ অনেকাংশে কমে আসবে। ব্যায়াম করলে শরীরের বাড়তি ক্যালরি ক্ষয় হয়ে যাবে। স্থূল হলে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ব্যায়াম আস্তে আস্তে শুরু করুন।
* ওষুধ : ওষুধ ব্যবহার করে স্থূলতা কমাতে চাইলে এর প্রধান জটিলতা হল ওষুধের ব্যবহার বন্ধ করলে আবার স্থূলতা ফিরে আসে। ওষুধ ব্যবহার একটা মধ্যবর্তী পন্থা এবং অনেক ওষুধের কার্যকারিতায় এটা হতে পারে। ওষুধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এমফেটাফিন জাতীয় ওষুধ যেমন- ফেন্টারমিন যা অরুচি তৈরি করে খাদ্য গ্রহণ কমায় এবং স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। ছয় মাসে ৪.৪ কেজি থেকে ১০ কেজি ওজন কমতে পারে। এটা এককভাবে ব্যবহার করলে ভালো ফল দেয়। তবে ২০ শতাংশ রোগীর পালমোনারি হাইপারটেনশান হতে পারে।
সিবট্রোমিন কেন্দ্রীয়ভাবে নরইপিডেনফ্রিন এবং সিরোটিনিন আপটেক বন্ধ করে। দৈনিক কয়েকবার ব্যবহার করলে ৭ শতাংশ ওজন হ্রাস পেতে পারে। তবে এটা ব্যবহারে মানসিক অবসাদ হতে পারে। এটা কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডও কমায়। ওরলিসট্যাট আন্ত্রিক লাইপেজ ইনহিবিটার। ফ্যাট ম্যালআবসরবশন করে ওজন কমায় (প্রায় ৮.৭ কেজি কমে। শুধু ডায়েটিং করলে ৫.৮ কেজি কমে)। ২ বছর ব্যবহার করায় টাইপ-২ ডায়াবেটিকদের মেটফরফিন ওষুধ ব্যবহারে অরুচি হয় এবং ওজন কমে যায়।
সার্জারি : খুব বেশি স্থূলতা, বিএমআই ৪০-এর ওপরে মৃত্যুহার বাড়িয়ে দেয়। পুরুষের ক্ষেত্রে ১২ ভাগ (২৫-৩৫ বছরের মধ্যে) এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬ ভাগ (৩৫-৪৫ বছরের মধ্যে)। এসব রোগীর ডায়েট, ব্যায়াম, ওষুধে কোনো কাজ হয় না। সার্জারির মধ্যে ভার্টিক্যাল ব্যান্ড গ্যাস্ট্রোপ্লাস্টি এবং রোক্স এনওয়াই গ্যাস্ট্রিক বাইপাস উল্লেখযোগ্য।

সূত্রঃ যুগান্তর।

search tags: obesity hole ki korbo, obesity hole koronio, pete chorbi jomle ki korbo, pet komanor upay, sthulotar lokkhon, obesityr lokkhon, ghumer moddhe nak dakar karon, bivinno joint e bethar karon, bat bethar karon, peter med chorbi komanor oushudh, surgery r maddhome peter med komanor upay.